
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত গণভোটে শিক্ষার্থীরা সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন। চার দিনব্যাপী এ গণভোটে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ৮৬ শতাংশ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন মাত্র ১১ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এ গণভোটের আয়োজন করে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এ ফলাফল ঘোষণা করে। গণভোটে অংশ নিয়েছেন ১ হাজার ১৪৫ শিক্ষার্থী, যার মধ্যে ২৬টি ভোট (২ দশমিক ৫ শতাংশ) বাতিল হয়।
ফলাফল ঘোষণার জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ভূমিকা সরকার ও সঞ্চালনায় ছিলেন মৃত্যুঞ্জয় রায়। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছায়েদুল হক (নিশান)। আরও বক্তব্য দেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক আবদুর রহমান, সুদীপ্ত হালদার, শওকাত ওসমান স্বাক্ষর প্রমুখ।
ছায়েদুল হক বলেন, ‘এই গণরায় শুধু বরিশাল নয়, দেশের সব গণতন্ত্রকামী শিক্ষার্থীর আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। আমরা প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাই, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংস্কার করে দ্রুত ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের নির্বাচনের রূপরেখা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের এই গণরায়কে কোনোভাবেই উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে গণতন্ত্রের চর্চা, বিকাশ ও সুস্থ-সবল নেতৃত্বের বিকাশের আঁতুড়ঘর।’
ছায়েদুল হক আরও বলেন, ছাত্র সংসদ না থাকলে ক্যাম্পাসে দুর্বৃত্তায়ন ও গোপন রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ে। গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব ছাড়া শিক্ষার্থীদের মতামত কোনো সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হয় না। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের ভূমিকাকে অগ্রাহ্য করলে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন অসম্ভব।
সভাপতির বক্তব্যে ভূমিকা সরকার বলেন, ‘এই গণভোট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা, এখনই সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পথ সুগম করার। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৪ বছর পার হয়েছে। কিন্তু এখনো এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামো–সংকট প্রকট। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের কক্ষ নেই, আবাসন নেই, পরিবহনসংকটও প্রকট। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণগ্রন্থাগারে পর্যাপ্ত বই নেই, গবেষণা নেই। তাই পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া গণতন্ত্র বিকাশের জন্য ছাত্রদের সুস্থ রাজনীতির বিকাশের জন্য ছাত্র সংসদের বিকল্প নেই। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাতে চাই, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংস্কার করে এখানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হোক।’